Published :
<span class="center">শ্রমিকলীগে কতো মধু ?</span>
ক্ষমতাসিন দলে বগুড়া জেলা শ্রমিকলীগের নেতৃত্ব এক পক্ষ নিতে চায়, অন্যপক্ষ দিতে চায় না। দলের সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলাল নির্ভর হয়ে বিগত দেড় যুগ ধরে চলছে সংগঠনটির কার্যক্রম। আর এসব কারণেই কেন্দ্র থেকে পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত করা এবং রাখা নিয়ে চলছে নাটকীয়তা। অভিযোগ উঠেছে পদের কারণে হেলালের হাতে যেমন আলাদীনের চেরাগ চলে এসেছে, তেমনি নতুন সদস্য সচিব সিজারও দলে হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারী। যুব শ্রমিকলীগ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি বনে থাকা সিজারের বিরুদ্ধে অতীতে সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ড ও চেইন-অব-কমান্ড না মানার অভিযোগ রয়েছে।
প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ উদ্দিনের হাত ধরে দেড় যুগ আগে সম্মেলন ছাড়াই শ্রমিকলীগে সাধারণ সম্পাদকের পদ পান সামছুদ্দিন শেখ হেলাল। এরপর সম্মেলন হলেও পূর্বের পদেই থেকে যান হেলাল। আর শ্রমিকলীগে থাকাকালীন আলাদীনের চেরাগ এসে ধরা দেয় তার হাতে। এখন আবার অভিযোগ উঠেছে হেলাল অধ্যায়ের সমাপ্তি টানার নামে শ্রমিকলীগে হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারীকে পদ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিকলীগের নেতৃত্বে কী মধু আছে সেটি নিয়ে ভাবনায় পড়েছে মূলদল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
গত ২১ জানুয়ারি জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কেএম আযম খসরু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বগুড়া জেলা শ্রমিক লীগের ৪৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর তিনদিন পরেই জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বগুড়া জেলা শাখার পূর্বের কমিটির বহাল রাখার বিষয়ে জানানো হয়। এখন কোন কমিটি বৈধ এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বাইরে বিতর্ক থাকলেও ঘোষিত দুই কমিটিকেই বৈধ বলে দাবি করছেন শ্রমিকলীগ বগুড়া জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত দুইপক্ষের নেতারা।
<span class="bold">যেভাবে চলছিলো শ্রমিকলীগ : </span> বিগত ২০০৪ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মরহুম আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপির উপস্থিতিতে বগুড়া জেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সম্মেলন হয়। সম্মেলন শেষে কমিটি গঠন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। সে সময় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে সভাপতি ও কামরুন নাহার পুতুলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা শ্রমিকলীগের কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু মত বিরোধের কারণে দেড় বছর পর কেন্দ্র থেকে সেই কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ডে শুরু হয় অচলাবস্থা। ১ বছর পর সমঝোতার ভিত্তিতে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালিন সভাপতি প্রয়াত আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিনের বাসায় বসে রফিকুল ইসলামকে সভাপতি ও সামছুদ্দিন শেখ হেলালকে সাধারণ সম্পাদক ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
শ্রমিকলীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলাল মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হন। এরপর থেকে তিনি সভাপতি ও দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শ না করেই নিজের ইচ্ছে মতো বিভিন্ন উপজেলায় তার মনোনিত ব্যক্তিদের নিয়ে শ্রমিকলীগের কমিটি করেন। এগুলো নিজে নিজেই অনুমোদন দেয়া শুরু করেন। এছাড়াও গঠনতন্ত্র পরিপন্থিভাবে বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকলীগের বন্দর কমিটি গঠন করতে থাকেন। এনিয়ে শ্রমিকলীগের প্রয়াত সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। অগঠনতান্ত্রিক উপায়ে গঠন করা বেশ কয়েকটি উপজেলায় শ্রমিকলীগের কমিটি ভেঙে দেন সভাপতি। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মারা যাবার পর দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয় আবদুস সালামকে। এই সালামের সঙ্গেও তার বিরোধ ছিলো। কয়েক বছর আগে বিএডিসিতে বীজ সরবরাহের টেন্ডার ম্যানেজে রাজি না হওয়ায় ঠিকাদার এবং ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সালামের সঙ্গে হেলালের বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। সাধারণ সম্পাদক সভা ডেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালামকে সরিয়ে সেখানে তৃতীয় সহ-সভাপতি আলী আশরাফ চিশতীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে সালাম গ্রুপের সঙ্গে হেলাল গ্রুপের মধ্যে তখন দ্বন্দ্ব ছিলো প্রকাশ্য। পরে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সুরাহা করা হয়।
<span class="bold">কমিটি নিয়ে নাটকীয়তা :</span> জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কেএম আযম খসরু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বগুড়া জেলা শ্রমিক লীগের ৪৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে শ্রমিকনেতা কামরুল মোর্শেদ আপেলকে আহবায়ক ও রাকিব উদ্দিন সিজারকে সদস্য সচিব করা হয়।
সিজারকে কমিটিতে রাখায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠে। এর আগে সে জাতীয় শ্রমিকলীগ যুব কমিটিতে থাকলেও শ্রমিকলীগে পদ দেয়ায় তার অতীত টেনে বের করা হয়। অভিযোগ করা হয় সিজার হাইব্রিড নেতা। বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেয়া তার ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এসব ছবি ছড়িয়ে পরার পর সিজার সংবাদ সম্মেলনে জানান, তিনি দীর্ঘ সাত বছর যুব শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তার বাবা শ্রমিকনেতা আবদুল গফুর ও অন্যরা আওয়ামী ঘরানার। প্রতিপক্ষ ছবি এডিট করে তাকে যুবদল নেতা বানিয়েছে।
এদিকে ২১ জানুয়ারি আহবায়ক কমিটি ঘোষণার তিন দিন পর ২৪ জানুয়ারি জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান স্বাক্ষরিত অন্য একটি বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় শ্রমিক লীগ বগুড়া জেলা শাখার পূর্বের কমিটির বহাল রাখার ব্যাপারে জানানো হয়। এতে করে দুইপক্ষের টানাপোড়ন আরো জটিল আকার ধারণ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের গত ২৩ জানুয়ারি তারিখে জাতীয় শ্রমিক লীগ বগুড়া জেলা শাখা হতে প্রাপ্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে দাখিলকৃত তথ্যাদি পর্যালোচনান্তে আবেদনটি বৈধ বিবেচিত হয়। জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিজের দেওয়া সার্কুলার ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের দুইটি সভার সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য ও অমান্য করেছেন। তিনি গত ২১ জানুয়ারি জাতীয় শ্রমিক লীগের ২০২২-০১-০৩ সূত্রে বগুড়া জেলা শাখায় যে আহবায়ক কমিটি প্রদান করেছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, গঠনতন্ত্র বিরোধী, অসাংগঠনিক। এ কারণে অবৈধ কমিটি বাতিল করা হলো। এই চিঠিতে বগুড়া জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আবদুস ছালাম ও সামছুদ্দিন শেখ হেলালের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে আগামী (০৩) তিন মাসের মধ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জানানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়।
<span class="bold">দুদকের নজরদারি :</span> বগুড়ার প্রভাবশালী শ্রমিক নেতা বগুড়া মটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলাল বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাসে কত টাকা ভাতা গ্রহণ করে এবং তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে বগুড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ চিঠি পাঠানো হয়। চিঠির প্রেক্ষিতে বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের হিসাব বিভাগ থেকে শেখ হেলাল ৩০ হাজার টাকা সম্মানি ভাতা নেয়ার একটি জবাব দেয়া হয়েছে। এছাড়া তার সম্পত্তির একটি হিসেব বিবরণী ৩ মাস আগে দুদকে জমা দেয়া হয়েছে। এখন সেগুলো পর্যালোচনা চলছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সুত্র জানায়, হেলালের জমা দেয়া বিবরণী সঠিক নয়। শিগগিরই তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হতে পারে।
<span class="bold">শ্রমিকলীগে হেলাল উত্থান : </span> সামছুদ্দিন শেখ হেলাল বগুড়ায় খুবই প্রভাবশালী হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি তিনি ছিলেন বাসস্ট্যান্ডের ‘কলার বয়’। কোন বাস কখন ছাড়বে, যাত্রীদের ডেকে তা জানিয়ে দেওয়ার কাজ করতেন তিনি। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তিনি শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যুক্ত হন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কপাল খুলে যায় সামছুদ্দিন শেখের।
তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আসে রেলের জমি দখলের। তাও আবার ইজারার নামে। অভিযোগ রয়েছে আগে দখল, পরে ইজারা এই পদ্ধতিতে নিতেন হেলাল। বিভিন্ন সময় তিনি এই তথ্য স্বীকারও করে বলেন, জমি যার দখলে থাকে, রেল তাকেই ইজারা দেয়। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
বগুড়ার সাতমাথা হচ্ছে সাতটি রাস্তার মোড়। এখানে করোনার আগে প্রতি রাতে চলাচলরত শতশত বাস-কোচ থেকে চলতো চাঁদাবাজি। বগুড়া হয়ে যেসব গাড়ি ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাওয়া-আসা করে আগে প্রতিটিকেই চাঁদা দিতে হতো। আর এটা উঠতো হেলালের নির্দেশে।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার সময় নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় সামছুদ্দিন শেখ নিজের সম্পদের হিসাব দিয়েছিলেন। তাতে উল্লেখ ছিলো তার নগদ ১৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা, একটি মাইক্রোবাস, একটি মোটরসাইকেল, ২৩ শতাংশ কৃষি-অকৃষি জমি ও ছয়তলা একটি ভবন আছে। পেশায় গৃহিণী তাঁর স্ত্রীর নামে নগদ ১৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, ১১ শতাংশ জমি ও পাঁচতলা ভবন, তিনটি বাস ও ১২ ভরি স্বর্ণালংকার থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। এখন তাদের সম্পদ আরও অনেক বেড়েছে। তিনি ‘শাহ ফতেহ আলী’ নামে একটি বাস কোম্পানির পার্টনার। বগুড়া-ঢাকা গন্তব্যে এই কোম্পানীর শতাধিক বিলাসবহুল বাস চলাচল করে। হেলাল এবং তার আত্নীয় স্বজনদের নামে এই কোম্পানীতে অনেকগুলো বিলাস বহুল গাড়ি রয়েছে। এছাড়া নিউমার্কেট এবং চুড়িপট্টি মার্কেটে তার একাধিক দোকান রয়েছে। বাদুড়তলা ও উপশহরেও রয়েছে দামি বাড়ি।
<span class="bold">সিজার বিতন্ডা : </span>বগুড়া জেলা শ্রমিক লীগের ৪৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটিতে রাকিব উদ্দিন সিজারকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। অভিযোগ ওঠে অতীতে সিজার বগুড়া যুবদলের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলো। এ কারণে কমিটি বাতিলের দাবিতে একপক্ষ প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
শ্রমিক নেতা সামছুদ্দিন শেখ হেলাল সিজার সর্ম্পকে তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, বগুড়ায় আওয়ামী লীগ পরিবারের এ কী অবস্থা ? বিএনপি, যুবদলের নাশকতা মামলার আসামিদের জেলা শ্রমিক লীগের নেতা বানানো হয় ? এ প্রশ্নের উত্তর কে দেবে ? হেলাল জানান, সিজার বগুড়া শহর যুবদলের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ছিলেন। তাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে দেখা গেছে। সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সালাম লিখেছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ২০১৪ সালে বগুড়ায় এলে তার সঙ্গে নাশকতা মামলার আসামি রাকিব উদ্দিন সিজার ছিলেন।
২৪ জানুয়ারি সিজার তার ফেসবুক ওয়ালে পাল্টা জবাব দিয়ে লেখেন বিগত ২০১৫ সালের পর থেকে শ্রমিকলীগের কমিটিতে চলেছে বহু অনিয়ম ও অপরাজনীতি। সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলাল তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম, বগুড়ার জেলা শিবিরের অন্যতম নেতা এরশাদুল বারী এরশাদ, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ মিঠুল এর সংগে প্রকাশ্যে যাতায়াত করতেন। তারা জাগয়া কেনাবেচা, জায়গা দখল, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকর্মতে দলকে ব্যবহার করেন। হেলাল সম্প্রতি বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে সভাপতি পদে কামরুল কামরুল মোর্শেদ আপেলের ভোট না করে দলকে ব্যবহার করে বিএনপি-জামাতের প্রতিনিধি, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ মিঠুলকে নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে সকলের সামনে হাত তুলে নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করেন।
সিজার আরো লেখেন, বিএনপি জামায়াত এর শীর্ষ নেতাদের নেপথ্যে কাজ করার এজেন্ট সামছুদ্দিন শেখ হেলাল। আমি জাতীয় শ্রমিক লীগ, বগুড়া জেলা শাখার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন ও জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, বিএনপি জামায়াতের এজেন্ট এই সামছুদ্দিন শেখ হেলালকে জাতীয় শ্রমিক লীগ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হোক।
<span class="bold">নেতাদের বক্তব্য : </span> বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু বলেন, যেকোনো সংগঠনের নেতৃত্ব পরিবর্তন না হলে ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত থেকে যান। একারণে গনতান্ত্রিক উপায়ে নেতৃত্ব বদলটা জরুরি। জেলা শ্রমিক লীগে কী মধু আছে যে পদ নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়েছে। অচিরেই এই সমস্যা সমাধান করা দরকার ।
জাতীয় শ্রমিক লীগ বগুড়া জেলা শাখার সদস্য সচিব দাবি করে রাকিব উদ্দিন সিজার জানান, গত ২১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কেএম আযম খসরু স্বাক্ষর করে জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে আহবায়ক কমিটি পাশ করেন। এরপর থেকে সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। একটি দলের সাধারণ সম্পাদকই কমিটি অনুমোদন বা ঘোষণা করতে পারেন। অন্য কোন পদের কেউ কমিটি অনুমোদন দিতে পারেন না। ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি কাজ করছে। দলীয়ভাবে অনুমোদন পেয়েই কাজ করা হচ্ছে। কমিটি দুটি নেই। একটি কমিটি এবং সেটি আহবায়ক কমিটি।
বিরোধীতাপূর্ণ জাতীয় শ্রমিক লীগ বগুড়া জেলা শাখার আহবায়ক কামরুল মোর্শেদ আপেল জানান, গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাধারণ সম্পাদকের অনুমোদনমুলে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে কমিটি নিয়ে তাদের কথার কোন গুরুত্ব নেই। তারা শুধুমাত্র অপপ্রচার করছে।
ভেঙে দেয়া বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুস সালাম জানান, ক্ষমতার অপব্যবহার করে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রে কিছুটা ঝামেলা চলছে। সেটি এখন ঠিক হয়ে গেছে। আগামী তিনমাসের মধ্যে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সম্মেলন করার কথা বলা হয়েছে। সেটি আমরা করছি। কমিটি দুটি নেই। একটি কমিটি আছে, সেটি পূর্বের জেলা কমিটি।
এ ব্যাপারে জানতে ভেঙে দেয়া কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলালের মোবাইলে ২দিন ধরে একাধিকবার ফোন করে ও ম্যাসেজ দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তিনি কোন রিপ্লাইও করেননি।
