Slide Left Slide Right
News Image
News Image
News Image
বিশেষ সংবাদ

Published :

<span class="center">ফিটনেসে মেয়েদের আস্থা জিম </span>

২০১৩ সালের কথা। ওই সময় মেয়ে হয়ে ঘরের বাইরে গিয়ে শরীরচর্চা করতে জিমে যাবে এমনটা কল্পনাই করতে পারেননি জেরিন। গর্ভধারণ করতে গিয়ে মুটিয়ে যাওয়ায় মাত্র ২২ বছর বয়সে আর্থ্রাইটিসের মত প্রদাহজনিত রোগের শিকার হতে হয়েছিলো তাকে। ডাক্তার পরামর্শ দিলো জিমে গিয়ে ওজন কমাতে। কথাটা শুনে আকাশ ভেঙে পড়ল তার মাথায়।

কারণ শ্বশুরবাড়ি রক্ষণশীল। ওজন কমাতে পুত্রবধূ বাইরে যাবে এটা কখনোই মেনে নেবেন না তারা। ওইসময় পাশে এসে দাঁড়ান চাকরীজীবী স্বামী সাইফুল। ভর্তি করে দেন বগুড়া জিমন্যাসটিক ক্লাবে। তার পূর্ণ সহযোগিতায় শ্বশুর শাশুড়ি থেকে লুকিয়ে জিমে যেতেন তিনি। একপর্যায়ে ওজন কমাতে সক্ষম হন। এজন্য তিনি মনে করেন, জিমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তার জীবনকে বদলে দিয়েছে। এখন তার আগের মত শরীরে ব্যথা হয় না।

কথা হচ্ছিলো জেরিনের সঙ্গে। জিমে শরীরচর্চা করতে গিয়ে তাকে আগে যেরকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো এখন আর হতে হয় না। ওজনও কমিয়েছেন ২০ কেজি। তিনি বলেন, এখন মেয়েরা স্বাস্থ্যের প্রতি অনেক সচেতন হয়ে উঠেছে। জড়তা কাটিয়ে নিজেকে ফিট রাখতে মেয়েরা নিয়ম করে ফিটনেস সেন্টার বা জিমে যাচ্ছেন।

বগুড়া জিমের ট্রেইনার এবং বর্তমান ইয়োগা জিমের স্বত্ত্বাধিকারী রনি জানান, আগে একটা প্রচলিত ধারণা ছিলো জিম শুধু ছেলেরা করবে। এখন এ ধারণা পাল্টেছে। শরীরকে ফিট রাখতে মেয়েরা আগের চেয়ে অনেক সচেতন। তাই জিমগুলোতে আগের চেয়ে মেয়েদের উপস্থিতি অনেক বেড়েছে।

চাহিদা অনুযায়ী মেয়েদের জন্য ফিটনেস সেন্টার গড়ে না উঠলেও বগুড়ার এলিট এলাকা বলে খ্যাত জলেশ্বরীতলায় গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি জিম। তাদের মধ্যে রয়েছে পিংক রোজ বিউটি পার্লার অ্যান্ড লেডিস জিম, লাবন্য জিম, ফিটনেস জিম, অক্সিজেন জিম, ডলফিন জিমসহ আরো কয়েকটি। এদের মধ্যে লাবন্য জিম ও পিংক রোজ বিউটি পার্লার এন্ড লেডিস জিম শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য জিমের ব্যবস্থা করেছে।

লাবন্য বিউটি ফ্যাশন অ্যান্ড জিম এর স্বত্ত্বাধিকারী তাহমিনা আকতার তনু জানান, ২০১৫ সালে তনু ছেলেদের জিমে যাতায়াত করতেন। সেখানে মাত্র ১ ঘন্টার জন্য জিমে গিয়ে তেমন কোন ফলাফল পেতেন না। কারণ ছেলেদের শিফট শুরু হয়ে যেত। ছেলেদের শিফট ২টি কিন্তু মেয়েদের শিফট ছিলো একটি। এতে তার মনে হলো এমন একটি ফিটনেস সেন্টার তৈরি করা যেখানে সব শ্রেণি পেশার মেয়েরা তাদের সুবিধা মতো সময়ে জিম করতে পারে। বর্তমানে তার জিমে ৫ শিফটে প্রতিদিন ১২০ জনের বেশি সদস্য শরীর চর্চা করতে আসেন। দিন দিন সদস্য সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে মেয়েরা শরীরকে সুস্থ ও সুন্দর রাখার জন্য জিমকে বেছে নিচ্ছেন।

জিম করতে আসা সুলতানা হক জানান, আমার পিসিওডি’র সমস্যা আছে। গত বছর ধরা পড়ে। ডাক্তার ওজন কমাতে বলেন। কিন্তু চাকরি করার কারণে অন্য জিমগুলোতে সময় মেলাতে পারছিলাম না। এটি লেডিস জিম হওয়ায় যে কোন সময় এসে শরীর চর্চা করে যেতে পারছি।

ব্যাংকার মাহমুদা জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। এছাড়া তার পায়ে পানি আসতো। এ কারনে তিনি হাঁটতে পারতেন না। চিকিৎসকের পরামর্শে জিম করার ফলে তার পায়ে পানি আসে না। পায়ের ব্যাথাও অনেক কমে গেছে।

আরেক সদস্য লাবনী রহমান বলেন, এখানে ট্রেড মিল, সাইক্লিং বেশি করি। বডিতে যাতে ফ্যাট না জমে বা স্লিম থাকার জন্য করে যাচ্ছি। শুরুর দিকে আমার ওজন ছিলো ৮৩ কেজি। এখন ২ মাসে পর ৭৭ কেজি হয়েছে।

তার পাশেই থাকা নারী উদ্যোক্তা রাজিয়া সুলতানা ডলি জানান, এই জিমের পরিবেশটা ভালো। অন্য জিমগুলিতে এমন পরিবেশ পাওয়া যায় না। আমি এখানে সাইক্লিং, কার্ডিও ও বিভিন্ন ধরনের ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করি।

পিংক রোজ বিউটি পার্লার এন্ড লেডিস জিম স্বত্ত্বাধিকারী ফাইমা ফেরদৌসী দিনা জানান, তিনিও ২০১৮ সালের দিকে ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে জিমে যাওয়া শুরু করেন। কিন্তু ছেলেদের ও মেয়েদের জিম একই হওয়ায় খুব সমস্যা পড়তে হতো তাকে। এ্যারোবিক, ইয়োগা জুমবা সময় নিয়ে করা সম্ভব হতো না। জিমে গিয়ে তার ওজন কমেছিলো ১৫ কেজি।

কিন্তু পরবর্তীতে সময় নিয়ে সমস্যায় পড়ায় তার জিমে যাওয়া আর হয়ে ওঠেনি। এতে তার আবার ওজন বেড়ে যায়। মেয়ে হয়ে নিজের সমস্যার কথা ভেবে নিজেই উদ্যোক্তা হয়ে তিনি ২০১৯ সালে জলেশ্বরীতলায় পিংক রোজ বিউটি পার্লার এন্ড লেডিস জিম শুরু করেন। প্রথম দিকে তার জিমে মাত্র ৩ জন ছিলেন। বর্তমানে তার জিমে ৬০ জন মেম্বার আছেন। করোনার পর অনেক মেয়ের উপস্থিতি কমে গেলেও এখন আবার বেড়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জিমে মেয়েরা আসে। সব ধরনের ব্যায়াম করতে পারে তারা।

জিম করতে আসা মেম্বার রাজিয়া সুলতানা ডল জানান, তিনি একজন উদ্যোক্তা। ব্যবসার কাজেই ফাইমার সঙ্গে পরিচয়। ফাইমা জিম খুলেছে শুনে তিনি নিয়মিত যাতায়াত করতে থাকেন। জিম করার পাশাপাশি ডায়েট চার্ট ও ফলো করতেন। আগে তার ৭৫ কেজি ছিলো এখন ৬৮ কেজি। তিনি আরো কমাবেন বলে জানান।

ফিটনেস সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী পাপিয়া নিপা জানান, তাদের জিমে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই আসেন। কিন্তু মেয়েদের সদস্য সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে।

<span class="bold">ক্রেডিট : জিনাত টিউন</span>

News Image
News Image
News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

Public Figures

Slide Left Slide Right
News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image